অবসর সময়ে ভ্রমণ করুন ও দেশ সম্পর্কে জানুন - পর্যটনবিডি.কম
Description About Tourism or Parjatan Place of Tangail
এ পৃষ্ঠা থেকে ট্যুরিষ্ট বা পর্যটক টাংগাইল জেলার ভ্রমন তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারবে। যা তাদের ভ্রমনের ক্ষেত্রে কাজে আসবে। শুধু তাই নয় এখনকার প্রতিটি ভ্রমন স্থানের নামের সাথে একটি তথ্যবহুলভিডিও-এর হাইপারলিংক করা আছেযার মাধ্যমে ভিডিও দেখে স্থান সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা পাবে ও ভ্রমণ সম্পর্কে তারা আগ্রহীহয়ে উঠবে।
টাঙ্গাইল শহর থেকে প্রায় ছয় কিলোমিটার দক্ষিণে দেলদুয়ার উপজেলার আতিয়া গ্রামে অবস্থিত আতিয়া মসজিদ। লৌহজং নদীর পূর্বপারে লাল ইটের তৈরি এ মসজিদটি দেখতে চমৎকার। একসময় ১০ টাকার নোটে আতিয়া মসজিদের ছবি ছিল। বর্গাকৃতির মূল মসজিদটিতে একটি গম্বুজ। এছাড়া পূর্বদিকে অপেক্ষাকৃত ছোট তিনটি গম্বুজবিশিষ্ট আয়তাকার বারান্দা রয়েছে। মসজিদের কিবলামুখী দেয়ালে রয়েছে তিনটি অলঙ্কৃত মিহরাব। পূর্ব ও উত্তর দেয়ালে আছে চমৎকার পোড়ামাটির নকশা।
সুলতানি ও মুঘল স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের আতিয়া মসজিদের নির্মাণকাল ১০১৯ হিজরি বা ১৬১০-১১ খ্রিস্টাব্দ। জাতীয় জাদুঘরে রক্ষিত মসজিদের একটি শিলালিপি থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়। জানা যায় সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময় টাঙ্গাইলের অন্যতম ভূস্বামী বায়েজীদ খান পন্নীর পুত্র সাইদ খান পন্নী সাধক শাহ বাবা কাশ্মিরির সম্মানে এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। নির্মাতা মসজিদের পাশে একটি বড় পুকুর খনন করেন যা এখনো বিদ্যমান। ১৮৩৭ এবং ১৯০৯ সালে মসজিদটি দু বার সংস্কার করা হয়েছে। আতিয়া মসজিদ বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধীন একটি সংরক্ষিত স্থাপনা।
মির্জাপুরে অবস্থিত মেয়েদের আবাসিক বিদ্যায়তন। দানবীর হিসেবে খ্যাত রণদাপ্রসাদ সাহা (আরপি সাহা) এর প্রতিষ্ঠাতা। এটি টাঙ্গাইল তথা দেশের একটি ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। বিশেষ করে বিজয় দিবসে জাতীয় স্টেডিয়ামে যে কুচকাওয়াজ হয় তাতে ভারতেশ্বরী হোমসের মেয়েদের শারীরিক কৌশল খুবই প্রশংসিত হয়। এর কাছাকাছিই কুমুদিনী হাসপাতাল। এটিও আরপি সাহা প্রতিষ্ঠা করেন। একাত্তরের মার্চে মহান এই সমাজসেবক ও দানবীরকে পাকিস্তানি সেনারা হত্যা করে।
পাকুল্লা থেকে মহাসড়ক ধরে টাঙ্গাইলের দিকে আরো কয়েক কিলোমিটার গেলেই মহাসড়কের চার কিলোমিটার দক্ষিণে অবস্থিত মহেড়া জমিদারবাড়ি। এ বাড়িটিতে পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন কর হয়েছে। যাওয়ার পথে রাস্তা থেকে ডানদিকে এর সাইনবোর্ড দেখা যাবে।পুলিশ ট্রেনিং সেন্টার হয়েছে বলেই হয়তো পুরোনো জমিদারবাড়িটি খুবই ভালো অবস্থায় আছে। বিশাখা সাগর নামে বিশাল একটি দিঘির পাশে এখানে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে আছে তিনটি প্রাসাদোপম ভবন।
এ ছাড়াও রয়েছে মন্দিরসহ আরো বেশ কিছু স্থাপনা। বিশাল আঙিনার সামনে একসারিতে রয়েছে সুরম্য ভবন তিনটি। সবার ডানদিকেরটির নাম চৌধুরী লজ, মাঝখানেরটি আনন্দ লজ এবং সবার বাঁয়ে মহারাজা লজ। প্রতিটি ভবনের প্রবেশ পথে আছে সিংহদরজা। একটু পেছনের দিকে কালীচরণ লজ নামে আরো একটি সুরম্য ভবন। তবে এটি সামনের তিনটির চেয়ে ছোট। কালীচরণ লজের পাশেই সুন্দর একটি মন্দির। এ জায়গাটি দেখতে কোনো প্রবেশমূল্য লাগে না। তবে বাড়িটি এখন পুলিশ ট্রেনিং একাডেমি বলে প্রধান ফটকে অনুমতি নিয়ে ঢুকতে হয়। এখানকার কর্তৃপক্ষ পর্যটকদের সঙ্গে বেশ সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করে থাকেন।
জেলা শহর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পূর্বে করটিয়ায় অবস্থিত জমিদার ওয়াজেদ আলী খান পন্নীর বাড়ি। প্রায় এক কিলোমিটার দীর্ঘ এবং আধ কিলোমিটার প্রস্থের এ বাড়িটি প্রাচীরঘেরা। বাড়িটির ভেতরে রয়েছে কয়েকটি অংশ। যেমন: রোকেয়া মহল, ছোট তরফ দাউদ মহল, রানী পুকুর ঘাট ইত্যাদি।
সন্তোষ জমিদারবাড়ির পাশেই রয়েছে জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর সমাধি। তৎকালীন অখন্ড ভারতের আসামে জন্মগ্রহণকারী ভাসানী তাঁর জীবনের প্রায় পুরোটাই কাটিয়েছেন এ সন্তোষে।নিপীড়িত গণমানুষের নেতা হিসেবে পরিচিত মওলানা ভাসানী এ দেশের রাজনীতিতে একসময় ব্যাপক প্রভাবের অধিকারী হলেও সন্তোষে অনাড়ম্বর জীবন কাটাতেন। তাঁর জীবনের বিভিন্ন সময়ের আলোকচিত্র ও ব্যবহৃত কিছু জিনিসপত্র নিয়ে পাশেই রয়েছে ছোট্ট একটি জাদুঘর। সন্তোষে আছে ভাসানীকে চীন সফরের সময় স্বয়ং মাও সেতুংযের উপহার দেওয়া একটি চাষের ট্রাক্টরও।
জেলার নাগরপুর উপজেলায় অবস্থিত পাশ্চাত্য ও প্রাচ্যের মিশ্র স্থাপত্যরীতিতে নির্মিত এ জমিদারবাড়ি। তিনতলা এ ভবনটির ভেতরের বেশিরভাগই শ্বেতপাথরের তৈরি। সবার ওপরের তলায় ছিল নহরতখানা। এ জমিদারবাড়িটিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে নাগরপুর মহিলা কলেজ।
জেলার ঘাটাইল উপজেলার অবস্থিত পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি। এ জমিদারবাড়ির প্রধান তিনটি ভবনই বেশ আকর্ষণীয়। তিনটির সামনেই রয়েছে নাট মন্দির। বর্তমানে এটি বিজিআরসি ডিগ্রি কলেজের একাডেমিক ভবন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ঘাটাইলে আছে একটি সেনানিবাস। এখানকার নদী-খাল বেষ্টিত গ্রামীণ পরিবেশ মুগ্ধ করবে।
এ পর্যন্ত বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতু। নির্মাণের সময় বিশ্বের ১১তম দীর্ঘ সেতু ছিল এটি। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৪ দশমিক ৮ কিলোমিটার এবং প্রস্থ ১৮.৫ মিটার। ঢাকা থেকে এ সেতুর দূরত্ব ১১৯ কিলোমিটার। টাঙ্গাইল-সিরাজগঞ্জ সড়কে অবস্থিত সেতুটির দু পাড়ে দুটি রেল স্টেশন আছে বলে কোনো লোকাল ট্রেনে চড়ে একইসঙ্গে সেতু দেখা ও যমুনার সৌন্দর্য্য উপভোগ করা যাবে। গাড়িতে চড়েও এ সেতুটির এপার- ওপার করতে পারেন। বঙ্গবন্ধু সেতুতে হাঁটার অনুমতি নেই। গাড়ির জন্য টোল পরিশোধ করতে হয়।